পলিমাটি ভরাট হয়ে বেতনা নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে যাওয়া, অপরিকল্পিত মাছের ঘের ও পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় সাতক্ষীরা পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের বদ্দীপুর কলোনিসহ পাশের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দরা বছরে পাঁচ মাসই পানিবন্দি অবস্থায় থাকেন। ফলে এখানকার বাসিন্দাদের দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে এলাকাবাসীর উদ্যোগে সাতক্ষীরার বদ্দীপুর কলোনির তিন রাস্তার মোড়ে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা এসব তথ্য জানান।
সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামীলীগের তিন নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাতক্ষীরা জেলা শাখার সম্পাদক ও নাগরিক আন্দোলন মঞ্চের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফাহিমুল হক কিসলু, জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ, গণফোরাম নেতা আলী নূর খান বাবুল, সাংবাদিক মুনসুর আলী, শ্রমিক নেতা ফারুখ হোসেন, গ্রামবাসী শাহাদাৎ হোসেন, রবিউল ইসলাম প্রমুখ। মানববন্ধন কর্মসূচি পরিচালনা করেন জেলা শ্রমিক ফেডারেশনের সহসভাপতি মকবুল হোসেন।
বক্তারা বলেন, পানি নিষ্কাশনের জন্য কালভার্ট নির্মাণ ও নর্দমা সংস্কারে পৌরসভায় প্রতি বছর মোটা অংকের টাকা বরাদ্দ হচ্ছে। ওই টাকা এলাকার উন্নয়নের নামে ব্যবহার না হয়ে তা চলে যাচ্ছে পৌরসভার জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ও কিছু সুবিধাভোগী দালালদের পকেটে। ফলে বদ্দীপুর কলোনি, তালতলা, বসুতিপাড়া, পশ্চিমপাড়া, সরদার পাড়া, পুলিনপাড়াসহ কয়েকটি অঞ্চল সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায়। বছরে পাঁচ মাস পানিবন্দি থাকতে হয় এলাকার মানুষদের। রাস্তার ওপর দিয়ে কোমর সমান পানি হওয়ায় ট্রলিতে করে যাতায়াত করতে হয়। শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী ও বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষদের দুর্গতির শেষ থাকে না। সুপেয় পানির কষ্টের পাশপাশি স্যানিটেশন ব্যবস্থাও ভেঙে পড়ে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি।
বক্তারা আরো বলেন, কয়েক বছর আগে বেতনা নদীর সুপারিঘাটা থেকে ঝাউডাঙা পর্যন্ত খননের জন্য ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও নামমাত্র কাজ করে সব টাকা লুটপাটের চেষ্টা করা হয়। বিশিষ্ট জনেরা অভিযোগ করায় তৎকালিন জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসেন হাওলাদার খনন কাজ তদারকির জন্য একটি কমিটি গঠন করেন। বেগতিক দেখে ঠিকাদাররা তুলে নেওয়া বিলের সাড়ে চার কোটি টাকা নিয়ে বাকি কাজ না করে সটকে পড়েন। তাই জলাবদ্ধতা দূরীকরণে সরকারি বরাদ্দের সকল টাকা খরচ করে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। রাস্তা উঁচু করতে হবে।
জলাবদ্ধতা দূর করার দাবি নিয়ে আগামী ১ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা পৌরসভা ঘেরাও কর্মসূচিতে সকলের শামিল হওয়ার আহ্বান জানান বক্তরা।