শিবালয় উপজেলার মহাদেবপুর ইউনিয়নের মহাদেবপুর গ্রামে আজ শুক্রবার ১৬ই মে সময় ৯ টায় এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে
নিজের সন্তান কর্তৃক বৃদ্ধ মা-বাবাকে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করা এবং বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই ঘটনার সম্প্রতি সময়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের কে নিয়ে সামাজিক সভা ডাকা হয়েছিল কিন্তু সভায় বৃদ্ধ মা বাবা উপস্থিত থাকলেও সন্তান রামুদে হাজির হয় নাই।
এই ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে বার্ধক্য জনিত অসহায়ত্ব পারিবারিক নিষ্ঠুরতার উদাহরণ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
ঘটনার বিবরণ অনেকদিন যাবত প্রতিবেশীদের ভাষ্যমতে, ওই পরিবারের ছেলে দীর্ঘদিন ধরে তার বাবা-মায়ের সাথে খারাপ আচরণ করছে।
বৃদ্ধ মা মমতা রানীদের বলেন শারীরিক নির্যাতন, গালাগালি এবং প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা না দেওয়ার পাশাপাশি সম্প্রীতি তাকে বাড়ি থেকে জোর করে বের করে দেওয়ার চেষ্টা চালায়।
বৃদ্ধ দম্পতি যাদের বয়স ৮০ – ৯০ এর কোঠায়, তারা শারীরিকভাবে অসুস্থ এবং আর্থিকভাবে সন্তানের উপর নির্ভরশীল। এক প্রতিবেশী জানান, গত কয়েক মাস ধরে আমরা ঐ পরিবারের ঝগড়াঝাটি চিৎকার ও কান্নাকাটি শব্দ শুনছি।
বৃদ্ধ মা মমতা রানী দে কে প্রায়ই রাস্তায় দাঁড়িয়ে কান্নাকাটি করতে দেখা যায়। প্রশাসনের ভূমিকা স্থানীয় সমাজসেবী সংস্থা মুভমেন্ট ফর সোশ্যাল জাস্টিস এ সভাপতি শিবালয় উপজেলা শাখার মনিরুল ইসলাম পলাশ
ঘটনাটি জানার পর বৃদ্ধ দম্পতিকে আইনি সহায়তা দিতে এগিয়ে আসে।
মহাদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদে বৃদ্ধ পিতা-মাতা অভিযোগ করলেও মহাদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাজাহান সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ সেন্টু কে মুঠোফোনে জানান, আমরা পরিষদ থেকে বৃদ্ধ পিতা মাতার সন্তান রামুদে কে তিন তিনবার ডাকার পরেও পরিষদে হাজির করতে ব্যর্থ হয়েছি বিধায় মহাদেবপুর পরিষদ থেকে আমরা লিখিত একটি প্রতিবেদন আইনগত ব্যবস্থার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করেছি।
এবং মানবাধিকার কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার সময়কালে এ বিষয়ে শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে স্থানীয় থানার ওসি মোঃ কামাল বলেন,আপনি ভুক্তভোগী পিতা-মাতাকে থানায় একটি অভিযোগ করতে বলেন।
বৃদ্ধ নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আইন প্রণয়ন করা আছে অভিযোগ হলে তা প্রয়োগ করা হবে”।
আইনি পদক্ষেপ বাংলাদেশে পিতা মাতার ভরণপোষণ আইন ২০১৩ অনুযায়ী, সন্তানরা আইনগত ভাবে বাধ্য থাকেন মা-বাবাকে দেখাশুনা ভরণপোষণ যাবতীয় সহযোগিতা করতে।
এ ধরনের অত্যাচারের শাস্তি হিসেবে জেল বা জরিমানা হতে পারে। স্থানীয় মহাদেবপুর ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার রেজাউল করিম খোকন বলেন পরিবারে শিক্ষায় নৈতিকতার অভাব,স্থানীয় সমাজসেবী লুৎফর রহমান লিপু বলেন আর্থিক স্টেস এবং যৌথ ব্যবস্থায় ভাঙ্গনই এমন ঘটনার মূল কারণ।
স্থানীয় বিএনপি নেতা দিদারুল ইসলাম দিপু বলেন এই কারণেই বৃদ্ধাশ্রমের বৃদ্ধ মা-বাবাদের চোখের পানি,সন্তানদের অমানবিক আচরণে ও দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা জরুরী।
স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী মুভমেন্ট ফর সোশ্যাল জাস্টিস এর প্রেস এন্ড পাবলিসিটি সেক্রেটারি কেন্দ্রীয় শাখা ক্রাইম নিউজ এর
সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ আবুল কালাম আজাদ সেন্টু বলেন, এই ঘটনা সমাজে বয়স্ক নাগরিকদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে।
আশা করা যায়, দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অপরাধী শাস্তি নিশ্চিত হবে এবং অন্যান্য পরিবারেও সচেতনতা বাড়বে।