গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অবগত হয়ে ঠাকুরগাঁও থেকে এস এ পরিবহনের মাধ্যমে মানিকগঞ্জে আসছে “সেনর গোল্ড” (Senor Gold) নামের সিগারেটের ১০,০০০ শলাকা ও ১,০০০ প্যাকেট জাল ব্যান্ড রোলসহ চালান। পণ্যের কোনো বৈধ কোম্পানির নাম বা নিবন্ধন নম্বর নেই বলে জানা গেছে।
গত ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ইং (শনিবার) বিকেল ৪টার দিকে সাংবাদিক মোঃ সেন্টু খান এ তথ্য ও উপাত্তসহ বিষয়টি মানিকগঞ্জ জেলার দায়িত্বরত কাস্টমসের উপ-কমিশনার সুভাষ চন্দ্র বসুকে মুঠোফোনে অবগত করেন।
কিন্তু অভিযোগ রয়েছে—তিনি অবগত হয়েও কোনো দাপ্তরিক বা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। পরবর্তীতে সাংবাদিকদ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (সেন্টু) কমিশনারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি অফিসে উপস্থিত থাকলেও সাক্ষাৎ থেকে বিরত থাকেন।
এ ঘটনায় গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে সেন্টু মনে করেন,এটি দায়িত্বহীনতা ও সরকারি আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯ অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মকর্তা দাপ্তরিক দায়িত্ব পালনে উদাসীনতা বা জনস্বার্থে প্রাপ্ত তথ্যের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করলে তা শৃঙ্খলাভঙ্গ হিসেবে গণ্য হতে পারে।
এছাড়া, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এবং দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ধারা অনুযায়ী, সরকারি দায়িত্ব পালনে গাফিলতি বা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে ইচ্ছাকৃত বিলম্ব করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, জাল ব্যান্ড রোল ব্যবহার করে তামাকজাত পণ্য বাজারজাত করা রাষ্ট্রের রাজস্ব ক্ষতির পাশাপাশি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অন্তর্ভুক্ত। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নির্দেশনা অনুযায়ী, তামাকজাত পণ্যে অননুমোদিত ব্যান্ড রোল ব্যবহার একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ, যার জন্য অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ড উভয়ই হতে পারে।
মানিকগঞ্জের স্থানীয় সাংবাদিক এম এ নজরুল ইসলাম এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গণমাধ্যমের দেওয়া তথ্য-উপাত্ত রাষ্ট্রীয় স্বার্থে ব্যবহারের পরিবর্তে অবহেলা করা অত্যন্ত দুঃখজনক। তারা বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
জনস্বার্থে গণমাধ্যমের ভূমিকা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদেরও দায়িত্বশীল আচরণ করা সমানভাবে প্রয়োজন। আইন অনুযায়ী প্রত্যেক সরকারি কর্মকর্তা জনগণের স্বার্থে দ্রুত, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য এটাই একটি জবাবদিহিমূলক প্রশাসনের মূল ভিত্তি।